পুঠিয়ায় ইটভাটার দূষিত ধোঁয়ায় এলাকাজুড়ে ফসলহানী


পুঠিয়া প্রতিনিধি

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন  স্থানে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠেছে ১৪ টি ইটভাটা। আর ইটভাটায় অতিনিন্মমানের কয়লা পুড়ানোর কারণে আশে-পাশের পরিবেশ চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে এলাকার চাষীদের শতশত হেক্টর ফসলী জমিতে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ ইটভাটার দূষিত ধোঁয়ার কারণে প্রতিবছর তাদের লক্ষ লক্ষ টাকার ফসলহানী ঘটছে।

পুঠিয়ায় ইটভাটার দূষিত ধোঁয়ায়ফসলহানী ঘটছে

উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন এলাকায় ১২ টি ও পৌরসভা সদরে দু’টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। যার বেশীর ভাগ ইটভাটার কোনো প্রকার বৈধ কাগজপত্র ইট পোড়ানোর চালিয়ে যা”েছ। এদের মধ্যে অনেক ভাটা মালিক প্রতিবছর উচ্চ আদালতে তিন থেকে চার মাসের জন্য রীট দাখিল করে ইট পোড়ানোর কাজ করছে।

অপরদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ১৫ হাজার ৫২ হেক্টোর ফসলী জমি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৩ হাজার হেক্টোর জমিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়। বাকি প্রায় দু’হাজার ৫২ হেক্টোর জমিতে বিভিন্ন ফলের বাগান গড়ে উঠেছে। তবে প্রতিবছর দফায় দফায় ফসলহানী ও বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় সম্প্রতি অনেক কৃষক ওই জমিগুলোতে পুকুর খননের দিকে বেশী ঝুঁকছেন।

ভালুকগাছি ইউনিয়নের বাঁশবাড়ী এলাকার কৃষক আবু তালেব বলেন, আমাদের এলাকায় ফসলী মাঠের মধ্যে নিয়ম ভর্হিভূত ভাবে যত্রতত্র ভাবে একাধিক ইটভাটা গড়ে উঠেছে। গত এক যুগেরও বেশী সময় থেকে ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে প্রতিবছর আমাদের এলাকায় বিভিন্ন ফসলহানী হছে। হাতে গোনা দু’চার জন ইটভাটার মালিকগণ লাভবান হলেও শত শত চাষীরা দূর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। কৃষকরা বিভিন্ন সময় উপজেলা কৃষি অফিস ও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একাধিক বার অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা হচ্ছে না। যার কারণে অনেক কৃষকরা বাধ্য হয়ে ফসলী জমিতে পুকুর খনন করছেন।

পৌর এলাকার আরিফুল ইসলাম বলেন, সরকারী নিয়ম অনুসারে পৌর এলাকায় ইটভাটা অবৈধ কিš‘ এখানে তার ব্যতিক্রম। ভাটা মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন দপ্তরে ম্যানেজ করে পৌর সদরের মধ্যে একই স্থানে দু’টি ইটভাটা গড়ে তুলেছেন। যার কারণে ভাটার দূষিত ধোঁয়ায় আশে-পাশেরআ এলাকাসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া ওই ভাটার কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পাশের একটি বিলে দেখা দেয় ব্যাপক জলাবদ্ধতা। পানি নিস্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর ওই বিলের প্রায় এক হাজার বিঘা জমির ফসল উৎপাদনে ব্যঘাত ঘটছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুনাহার ভূঁইয়া বলেন, ইটভাটা গুলোতে অতি নিন্মমানের কয়লা ব্যবহারের কারণে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ার প্রভাব এখন কৃষি জমির উপর পড়েছে। এতে ভাটার আশে পাশের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে সকল ফসলী জমিতে এর বিরুপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। কৃষকরা প্রতিনিয়ত ফসলহানীর মুখে পড়ছেন।এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওলিউজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।


শর্টলিংকঃ