বন্ধ হলে নিরাপত্তা সংশয়ে ইবি শিক্ষার্থীরা


ইবি প্রতিনিধি :

ঈদ-উল-ফিতর, গ্রীষ্মকালসহ কয়েকটি দিবস উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছুটি শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার থেকে। সোমবার (২৭ মে) সকাল ১০টার মধ্যে সব আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো মোট ১৭ দিন বন্ধ থাকবে বলে প্রভোস্ট কাউন্সিল সূত্রে জানা গেছে।

তবে ছুটিতে হল বন্ধ থাকায় হলে থাকা শিক্ষার্থীদের মূল্যবান জিনিসপত্রের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তারা। ছুটিতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সময় প্রতিবার বাড়তি নিরাপত্তার ঘোষণা দিলেও বিভিন্ন হলের জানালার গ্রিল কেটে, তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের কক্ষ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্রসহ ব্যবহার্য জিনিসপত্র খোয়া যাচ্ছে।

অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। গতকাল সোমবার থেকে আবাসিক হলসমূহ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সকাল ১০টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

ছুটি শেষে ১৩ জুন সকাল ১০টায় হলগুলো খুলে দেওয়া হবে। তবে ১৫ জুন প্রশাসনিক এবং ১৬ জুন থেকে যথানিয়মে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম চালু হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফ নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, গত শীতের ছুটি চলাকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ১০৯ নম্বর কক্ষের জানালার গ্রিল কেটে ডেস্কটপ, ফ্যান এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস চুরি হয়ে যায়। এর আগেও ওই হলের বারান্দার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করার সময় পার্শ্ববর্তী গ্রামের তিন চোরকে আটক করে আনসার সদস্যরা।

এছাড়া, লালন শাহ হলে ক্যাম্পাসে খোলা ও ছুটিকালীন মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন চুরির ঘটনা ঘটেছে। যা হলের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে চোরকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয় হল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে, ছাত্রীদের আবাসিক হলেও বেশ কিছু চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই ঈদের ছুটিতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের অন্তত ১২টি কক্ষে ছাত্রীদের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির অভিযোগ করেন আবাসিক ছাত্রীরা।

এ ঘটনায় তদন্ত কমিটিও গঠিত হয় বলে জানা যায়। এছাড়া, খালেদা জিয়া হলেও বন্ধ থাকাকালীন জামা-কাপড়সহ মূল্যবান জিনিস চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।

সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছোয়াদ বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার আগ মুহূর্তে বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তারা ক্যাম্পাসের মফিজ লেকে মাদক সেবনে লিপ্ত হয় এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ফল-ফলাদি চুরি করে।

এ সময় সুযোগ পেলে তারা হলগুলোতে চুরির ঘটনা ঘটায়। এ সকল অনাকাঙ্ক্ষিত চুরির ঘটনায় শিক্ষার্থীরা হলে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীদের দায়িত্বে অবহেলা এবং প্রশাসনের তদারকিতে অবহেলার অভিযোগ করেছেন।

তবে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা জানান, হলগুলো অনেক বড় এবং প্রয়োজনের তুলনায় ডিউটিতে নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা কম হওয়ায় একজনের পক্ষে সম্পূর্ণ হলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কষ্টকর হয়ে পড়ে।

এছাড়া, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় ফাঁকা ক্যাম্পাসে রাতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে।

নিরাপত্তার বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আকরাম হোসাইন মজুমদার বলেন, হল বন্ধ থাকায় হলের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমরা হলের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থা করব।


শর্টলিংকঃ